ঠিকানা পেলেন ২২ হিজড়া
প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসেবে আশ্রয়ণের ঘর পেয়ে নতুন ঠিকানা পেয়েছেন বরগুনার সমাজ বিতাড়িত ২২ জন হিজড়া।
মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বরগুনার খাজুরতলা আশ্রয়ণ প্রকল্পের উপকারভোগীদের কাছে তৃতীয় পর্যায়ে জমিসহ ঘর হস্তান্তর কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় আশ্রয়কেন্দ্র খাজুরতলা আশ্রায়ণ প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ে জমিসহ ৪১১টি ঘর হস্তান্তর কার্যক্রম উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত, সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে প্রধানমন্ত্রী ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। উন্নয়নের এ অগ্রযাত্রায় দেশের সব মানুষকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী ভূমিহীন ও গৃহহীন ছিন্নমূল জনগণকে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের আওতায় আনছেন।
বাংলাদেশে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না। প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দেশের ৬৪ জেলার ভূমিহীন ও গৃহহীনদের তালিকা করা হয় এবং তালিকা অনুযায়ী প্রত্যেক ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে দুই শতাংশ করে জমি ও একটি করে ঘর প্রদান কার্যক্রম চলছে।
বরগুনার ছয়টি উপজেলায়ই আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজ চলমান। প্রথম পর্যায়ে ২৩২টি, দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৯৩টি এবং তৃতীয় পর্যায়ে ৭২৫টি ঘরের মধ্যে ৪১১টির নির্মাণ কাজ শেষ, বাকিগুলোর কাজ চলছে। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী ৪১১টি ঘর হস্তান্তর করেছেন।
বরগুনা সদর উপজেলাধীন খাজুরতলা আশ্রয়ণ কেন্দ্রে মোট জমি রয়েছে ১১.৪০ একর। এখানে এরই মধ্যেই নির্মিত হচ্ছে ৩২৯টি ঘর। আরও ১৫০টি ঘর নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে, যা বাস্তবায়ন হলে এটি হবে বাংলাদেশের সব চেয়ে বড় আশ্রয়ণ কেন্দ্র। এখানে উপকারভোগী হিসেবে বরাদ্দ পেয়েছেন মৌসুমী, রত্না ,কাজল, চায়নাসহ ২২ জন তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) সদস্য, ১০ জন ভিক্ষুক, ২০ জন শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তি, ২৮ জন স্বামী পরিত্যক্তা নারী, ৪১ জন হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যসহ অন্যান্য সদস্য।
উপকারভোগীরা দুই শতাংশ করে জমি ও ওই জমিতে অর্ধপাকা দুই কক্ষের ঘর পাচ্ছেন বিনামূল্যে। বিদ্যুৎ সংযোগ লাগছে এখানে এবং প্রতিটি ঘরে রয়েছে গোসলখানা, টয়লেট ও রান্না ঘর।
গৃহসহ জমির দলিল স্বামী-স্ত্রী উভয়ের নামে যৌথভাবে করে দেওয়া হয়েছে। প্রকল্প এলাকায় প্রচুর পরিমাণে গাছ লাগানো হবে। সুপেয় পানির জন্য গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে।
এছাড়া একটি পুকুরও রয়েছে এ আশ্রয়ন প্রকল্পে। শিশু-কিশোরদের শরীর গঠন ও বিনোদনের জন্য প্রকল্প এলাকায় থাকছে খেলার মাঠ। একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ আধুনিক গ্রামের সব সুবিধাই থাকছে আশ্রয়ণ প্রকল্পে।
বিশেষ করে খাজুরতলা আশ্রয়ন প্রকল্পে ২২ জন তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যকে জমিসহ ঘর দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। ফলে সমাজের মূলধারায় আসার সুযোগ পাবে হিজড়ারা।